নিশনামাঃ ফিরে দেখা ২০২৩
২০২২ সালের পুরো বছর নিয়ে ২০২৩ এর প্রথম দিকে ইয়ার ইন রিভিউ ২০২২ ব্লগটা লিখেছিলাম। ২০২৩ এর ইয়ার ইন রিভিউটা অর্ধেক লিখেও অলসতায় শেষ করা হয় নি। ২০২৪ এখন শেষের পথে হাহাহা। যাই হোক দিয়েই দিলাম। নিজের ব্লগ নিশনামায় একটা রেকর্ড থাকুক। প্রতি বছরই এরকম ইয়ার ইন রিভিউ লেখার ইচ্ছাটা যেন পূরণ করতে পারি, ইনশা আল্লাহ।
কেমন গিয়েছিলো আমার ২০২৩ সাল —
১. অথল্যাব এজিএম ২০২২
আমি যেখানে চাকরি করি – সেই অথল্যাব প্রতি বছর তাদের এজিএম শহরের বাইরের কোন জায়গায় করে থাকে। ২০২২ এর মতো ২০২৩ এও আমরা সবাই মিলে দুই দিন এক রাতের জন্য গিয়েছিলাম শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্টে। আমাদের প্রায় ৯০ এর মতো লোক ছিল বিধায় পুরো রিসোর্টই ভাড়া নেওয়া হয়েছিলো।
২০২৩ এর এই এজিএম আমার আমার টিমের জন্য অনেক কিছু ছিলো। প্রায় অপ্রত্যাশিতভাবে ২০২২ এর সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং টিম এওয়ার্ড পাই আমরা! আমরা বলতে মাত্র ৩ জনের টিম – আমি, রাসেল ভাই ও উত্তম ভাই।
এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওনা ছিলো। কারণ ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট প্রোডাক্টের লঞ্চ থেকে শুরু করে ৪ হাজার পর্যন্ত ব্যবহারকারীতে নিয়ে যাওয়া — সবই করছিলাম আমরা দুইজনের টিমে। উত্তম ভাই (২০২২) বছরের লাস্টে যুক্ত হওয়াটা বাড়তি পাওনা ছিলো।
এই প্রডাক্ট মার্কেটিং টিমে কাজ করতে গিয়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি। জীবনের প্রথমবার প্রডাক্ট মার্কেটিং লিড হয়ে কাজ করা, প্রডাক্ট লঞ্চ, ফিচার আপডেট লঞ্চ, কাস্টমার স্যাটিসফেকশন, টিম বিল্ডিং, মেম্বার ম্যানেজ করা, কমিউনিকেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ে এক্সপারিমেন্ট, অনেক কিছু শেখা ও প্রয়োগ করার অজস্র সুযোগ পেয়েছি এই দুই বছরে। আমার টিম মেম্বারদের কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখেছি। এই জন্য অথল্যাবে কাজ করাটা আমার একটা ব্লেসিং মনে হয়।
অথল্যাব পিঠা উৎসব –
২. ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট ৫ হাজার হওয়া
এজিএম শেষ করে এসে ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের ৫ হাজার ইউজারের মাইলস্টোন পূর্ণ করাটা আরেকটা সাফল্যের অনুভূতি এনে দিয়েছিলো ২০২৩ সালে। কাস্টমার সাপোর্ট ক্যাটাগরিতে ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন হিসেবে ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের মাত্র ১ বছরে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেওয়াটা শুধুই লাক ছিলো না। এর সাথে ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট টিমের প্রতিটি সদস্যের শ্রম ও তাদের কাজের প্রতি ডেডিকেশন জড়িত ছিলো। আমি ভাগ্যবান যে এরকম একটা অসাধারণ টিমকে আমি লিড দিতে পেরেছি। এই টিম আমাকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে, নিজের মাঝেও যে অনেক কিছু আছে এই অনুভূতিটা আমার এই টিমে কাজ করতে গিয়েই বুঝেছি। অন্য এক নিশাতকে আমি চিনেছি ২০২২-২৩ এর সময়ে।
জানুয়ারি ১৭ – আলোকিত পাঠশালার জন্মদিন –
৩. আলোকিত পাঠশালা ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ
২০২৩ সাল আলোকিত পাঠশালা বরাবরের মতো খুব ভালো গিয়েছিলো। ২০২০ -২১ এ করোনার ধাক্কা কাটিয়ে আমরা ২০২২ এ মুটামুটি গুছিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। ২০২৩ এ তার ধারাবাহিকতায় আমরা শিক্ষাবর্ষ পুরো চালিয়ে গিয়েছি। ঐ বছর স্পন্সর এ চাইল্ড ক্যাম্পেইনে আমরা সারা বছরের খরচ চালিয়ে নিয়ে সফল ছিলাম।
অনেকেই হয়ত জানেন না, আমরা কয়েকজন মিলে ২০১৫ সাল থেকে সিলেটের বালুচর ছরারপারে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলতে “আলোকিত পাঠশালা” নামে একটা ফ্রি কমিউনিটি স্কুল চালাই। এখানে বিনাবেতনে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পড়ানো হয়। বিস্তারিত জানতে আমাদের আলোকিত পাঠশালার ফেইসবুক পেইজ দেখুন।
৩. ফ্লুয়েন্ট ফর্মের মার্কেটিং টিম লিড হওয়া
ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের টিম লিড হয়ে কাজ করার ২০২৩ থেকে আমার সব প্ল্যান ছিলো ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট নিয়েই। কিন্তু কোম্পানি ম্যানেজমেন্টের যে আমাকে নিয়ে আলাদা প্ল্যান তা কি আমি ঘুণাক্ষরেও জানতাম!
হঠাৎ করে এপ্রিল মাসের একদিন ডাক পড়লো বসের অফিসে। দেখি তিন বস বসা, ইমিডিয়েট বস আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসে। কেউ কিছু বলেন না। পরে থাকতে না পেরে বললাম ভাই চিন্তায় মরে যাচ্ছি বলেন কিছু!
তখন বস জানালেন যে আমাকে ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের প্রডাক্ট মার্কেটিং লিড থেকে সরিয়ে ফ্লুয়েন্ট ফর্মের প্রোডাক্ট মার্কেটিং লিড করা হচ্ছে।
প্রথমে খবরটা হজম করতে কষ্ট হচ্ছিলো। একদিকে আমার সব ধ্যান জ্ঞান ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টেকে কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস সাপোর্ট প্লাগইন ক্যাটাগরিতে এক নম্বরে আনা যায়। এরকম একটা পাঁচ বছরের ভিশন বোর্ডও বানিয়ে ফেলেছিলাম।
আরেকটা বিষয়, ফ্লুয়েন্ট ফর্ম কোম্পানির মেইন প্রোডাক্টের একটা। কাস্টমার বলেন, ইউজার বলেন ওয়ার্ডপ্রেস ফর্ম ক্যাটাগরিতে ৩ লাখ ইউজার নিয়ে অনেক দিক থেকে এগিয়ে ছিল।
এই প্রোডাক্টের দায়িত্ব নেওয়াটা অনেক বড় বিষয়। কারণ রেস্পন্সিবিলিটি এখানে অনেক বেশি। একই সাথে বিষয়টা আমার কাছে চ্যালেঞ্জিংও লাগছিলো। বসের রুমে ওইখানে বসেই আমার মাথায় অনেক কিছুই প্লে হচ্ছিলো যে প্রোডাক্টটাকে আর ভালো করতে আমি কি কি করতে পারি।
তবে দায়িত্বটা পেয়েই নিজের কাছের মানুষ ছাড়া আর কাউকে জানাতে পারি নাই সাথে সাথে। বসদের নিষেধ ছিলো। আর আমার আগের টিমের আমার ডান হাত – রাসেল ভাইও অসুস্থ হয়ে ঢাকায় ছিলেন। আমি ফ্লুয়েন্ট ফর্মের প্রোডাক্ট লিডের দায়িত্ব নেয়ার পর উনার হাতেই ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়।
প্রায় এক মাস পর মে মাসে অফিসিয়ালি সবাইকে জানানো হয় আমার ফ্লুয়েন্ট ফর্মের প্রডাক্ট লিড হওয়ার কথা। ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট থেকে ফ্লুয়েন্ট ফর্মের সব টিম মেম্বার আমার এই ট্রাঞ্জিশনে খুব সাপোর্টিং ছিলো। যা আমার কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছিলো। এই সময়ও নতুন টিমে আসা, সবকিছু জানা, নতুন করে গোছানো প্লানিং থেকে শুরু করে সব কিছু আমার জন্য একদম নতুন একটা অভিজ্ঞতা ছিলো।
৪. ওয়ার্ডক্যাম্প সিলেট
ওয়ার্ডপ্রেসের অফিশিয়াল যে ইভেন্ট হয় – তাকে ওয়ার্ডক্যাম্প বলে। সারা বছরই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি অর্গানাইজ হয়ে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেসের কন্ট্রিবিউটার্স ও ভলান্টিয়াররাই এটি অর্গানাইজ করে থাকে। বাংলাদেশে শুধুমাত্র ঢাকায় এক বার হলেও আর কোন জায়গায় ওয়ার্ডক্যাম্প হয় নি।
তাই সিলেটের ওয়ার্ডপ্রেস কমিউনিটি যখন ওয়ার্ডক্যাম্প সিলেট আয়োজন করে তখন শুরু থেকেই এই ইভেন্ট নিয়ে সবার মাঝে অনেক উত্তেজনা কাজ করছিলো। আমার জন্য সিলেট ওয়ার্ডক্যাম্প বিশেষ ছিলো, কারণ এটি আমার প্রথম ওয়ার্ডক্যাম্প। আমাদের অফিসের অনেকে কাঠমুন্ডু ও থাইল্যান্ডে ওয়ার্ডক্যাম্প নেপাল ও ওয়ার্ডক্যাম্প এশিয়া অংশ গ্রহণ করেছিলো। তাই তাদের ওয়ার্ডক্যাম্প অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা শুনে নিজেও অনেক এক্সসাইটেড ছিলাম এই ইভেন্টটা নিয়ে।
এই ইভেন্টে অথল্যাব স্পন্সর ছিলো আর আমাদের ফাউন্ডার ছিলেন লিড অর্গানাইজার। তাই আমাদের অফিসের সবাইই কম বেশি ওয়ার্ডক্যাম্প সিলেট আয়োজনে যুক্ত ছিলো। যেহেতু সিলেটে প্রথমবার ওয়ার্ডক্যাম্প হচ্ছে সবাইই মুটামুটি আগ্রহী ছিলো যুক্ত হওয়ার জন্য।
ইভেন্টের টিকেট ৪০০ এর ভেতর লিমিটেড ছিলো। তাই ঠিক টাইমে টিকেট ছাড়ার পর সবার টিকেট কেনার যে প্রতিযোগিতা ছিল সেটা অফিসের ওই সময়টাকে একটা উৎসবে পরিণত করেছিল। যদিও সাথে সাথে অনেকে টিকেট পায় নাই। পরে অবশ্য ওয়ার্ডপ্রেস অফিশিয়ালের সাথে কথা বলে অর্গানাইজাররা আরো টিকেট ছাড়েন, এতে দুই দিনের এই ইভেন্টে অংশগ্রহণ কারীদের সংখ্যা ৯০০ ছড়ায়! যেটা একটা রেকর্ড ছিলো।
কন্ট্রিবিউটর ডে’তে আমি অংশগ্রহণ না করলেও কনফারেন্স ডে আমার জন্য সেরা একটা দিন ছিলো। অসাধারণ কিছু স্পিকারদের সেশন উপভোগ করতে পেরেছিলাম সরাসরি। একই সাথে নানান প্রোডাক্ট স্টল ঘুরে তাদের সাথে কথা বলা, ওয়ার্ডপ্রেস সোয়াগ কালেক্ট করা খুবই মজার অভিজ্ঞতা ছিলো।
ওয়ার্ডক্যাম্প সিলেট আমার জন্য আর স্মরণীয় হয়ে থাকবে এখানে আমার কিছু প্রিয় মানুষের সাথে প্রথম বার দেখা হয়েছিলো। হাসিন হায়দার ও শাকিল আরেফিন – এই দুই ভাইয়ের লেখা বাংলা ব্লগ পড়েই ২০০৬- ২০০৭ সাথের দিকে ডিজিটাল মার্কেটিং, ফ্রিল্যান্সিং এইসব সম্পর্কে জানতে পারি।
এনাদের মতো আর কয়েজনের লেখা পড়েই আমার আইটি, ওয়ার্ডপ্রেস, ইন্টারেন্ট এইসব সম্পর্কে অনেক বেশী আগ্রহ তৈরি হয় যার কারণে ট্র্যাডিশন লাইনে পড়াশোনা করেও আইটিতে আজ ক্যারিয়ার গড়েছি।
তাই হাসিন হায়দার আর শাকিল আরেফিন ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়াটা আমার জন্য অনেক মেমোরিবল ছিলো।
একই সাথে প্রথম দেখা হয় এক্সনহোস্টের ফাউন্ডার সালেহ ভাইয়ের সাথে। আমি অনেক আগ থেকেই উনার কোম্পানি এক্সনহোস্টের কাস্টমার। তাই উনার সাথে দেখা হয়ে ভালো লেগেছে।
বি:দ্র: আমার এই ব্লগ নিশনামাও এক্সনহোস্টে হোস্ট করা। দেশের ভেতরে যারা ভালো হোস্টিং চান আমি তাদের সব সময় এক্সনহোস্ট রেকমেন্ড করি। (চাইলে আপনি আমার এফিলিয়েট লিংক দিয়ে এক্সনহোস্ট এর হোস্টিং বা ডোমেইন কিনতে পারেন। এতে আপনার বেশি কোন টাকা যাবে না, শুধুমাত্র আমার রেফারে এক্সনহোস্ট কিনলে আমি তাদের কাছ থেকে ওই সেলের একটা কমিশন পাব।)
৫. ফ্লুয়েন্ট ফর্মের ইয়ারলি ট্যুর
অথল্যাবে চাকরির সবচেয়ে বড় ফায়দার একটা হচ্ছে আমাদের কোম্পানি কালচার। এই কালচারে অনেক কিছুই আছে যা বাংলাদেশী কোম্পানিতে খুব একটা দেখা যায় না। তার একটা হচ্ছে কোম্পানি খরচে ইয়ারলি ট্যুর।
আগে একসাথে সবাই ট্যুর হলেও টিম মেম্বাররা বেশি হওয়ায় ২০২৩ সালের ট্যুর ভাগ করে দেওয়া হয় প্রোডাক্ট টিমের উপর। টিমের সবাই মিলেই ঠিক করে কে কোথায় যাবে। দেশে না বিদেশে, বাজেটে যেটা হবে সেখানেই সবাই মিলে যাবে। সময় স্বল্পতায় আমরা ফ্লুয়েন্ট ফর্ম টিম ঠিক করি কক্সবাজার সেন্টমার্টিনের এক সপ্তাহের ট্যুর।
টিমে সব ছেলেরাই ছিলো, প্রায় ৮ জন। এই ট্যুরটা টিমের সবার জন্যই সেরা একটা সময় ছিলো। প্লেনে করে সিলেট থেকে ডাইরেক্ট কক্সবাজার পৌঁছে এক পার্টি নেমে যায় সমুদ্রে আরেকটা পার্টি হোটেলে রেস্টে। প্রথমবার বিমান ভ্রমণের কারণে আমার কানের অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। তাই রেস্টের দরকার ছিলো। ওইদিন সমুদ্র দেখে পরেরদিন আমরা রওনা দেই সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে। প্রথম বার সাগর ভ্রমণ চমৎকার লেগেছে আবহাওয়া ভালো ছিলো বিধায়।
সেন্টমার্টিনে নেমেই আমাদের ট্যুরের আসল মজাটা শুরু হয় সামুদ্রিক মাছ খাওয়া দিয়ে। কি কি মাছ যে খাইলাম রে ভাই এই কয়দিন। হিসাব করলে প্রায় এগারো রকমের মাছ খেয়েছিলাম আমরা — কোরাল, রূপচাঁদা, কালাচাঁদা, সুরমা, আইড়, লাক্ষা, চিংড়ি, আইলা, স্যালমন, সুন্দরী, বালা।
সেন্টমার্টিন থাকাটা আমাদের জন্য সেরা ছিলো, কারণ ভাগ্যক্রমে অসাধারণ একটা রিসোর্ট বেলা ভিস্টাতে ছিলাম আমরা ৮ জন। রাতে বিদ্যুৎ না থাকার প্যারা ছাড়া সমুদ্রে গর্জন শুনে সারা দিন রাত কাটানো এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিলো। এর সাথে খাবারের কথা কি আর বলব। বেলা ভিসতা রিসোর্টে সবচেয়ে ভালো দিক ছিলো এর প্রাইভেট বিচ। আশেপাশে আর কোন রিসোর্টই ছিলো না। আর মানুষ কম হওয়ায় সময় খুবই ভালো কেটেছিল। ট্যুরের কয়দিন যেন ফুড়ুত করে উড়ে গেল। এরপর আবার চলে আসলাম আমরা সিলেটে নিজেদের কাজের রাজ্যে।
৬. আমায়রাহর প্রথম জন্মদিন
২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর ছিলো আমার মেয়ে আমায়রাহ এর প্রথম জন্মদিন। আমায়রাহর প্রথম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমাদের প্ল্যান ছিলো সবাইকে নিয়ে কাটানোর। যেহেতু প্রথম জন্মদিন আমরা চাইছিলাম নিজেদের পরিবার, আত্নীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব ও কলিগ সবাইকে নিয়েই যেন একটা ভালো জায়গায় জন্মদিনের পার্টি করি।
আল্লাহর রহমতে, মেয়ে একটু অসুস্থ থাকলেও সবাইকে নিয়ে খুব সুন্দরভাবে আমায়রাহ এর জন্মদিন কাটাতে পেরেছিলাম। আমায়রাহর জন্য সবার ভালবাসায় আমরা সিক্ত, শুকরিয়া আল্লাহতালার। আরো অনেকগুলা জন্মদিন যেন আমরা আমাদের মেয়েকে নিয়ে কাটাতে পারি।
আমি সব সময়ই চেয়েছিলাম আমার জীবনে একটা মেয়ের বাবা হব, আল্লাহ আমার সে ইচ্ছা পূরণ করেছেন ;এর থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে।
৭. ফ্লুয়েন্ট ফর্মের ৪ লাখ ইউজার ক্রস করা
বছরের লাস্টে আমাদের টিমের জন্য সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ ছিলো ফ্লুয়েন্ট ফর্মের ইউজার তিন লাখ থেকে চার লাখ হওয়া।
যদিও আমরা জানতাম এটা হবে। কারণ আমরা সারা বছর ধরেই ইউজার একুজিশনে কাজ করে যাচ্ছিলাম। বছরের শুরুতেই ফ্লুয়েন্ট ফর্মের তিন লাখ ইউজার ছুঁয়েছিল, তাই বছরের শেষটা ফ্লুয়েন্ট ফর্মের ৪ লাখ ইউজার মাইলস্টোন স্পর্শ করে ২০২৩ শেষ করাটা একটা ভালো ফিনিশিং দিয়েছিলো আমাদের।
বছরের শেষ অথল্যাব মার্কেটিং টিমের বিবিকিউ পার্টি দিয়ে – Featuring our CMO!
বছরের লাস্টে অথল্যাব মার্কেটিং টিম রিট্রিটে। জীবনের প্রথম সেশন নিয়েছিলাম সেই দিন। কি যে নার্ভাস ছিলাম!
এই ছিল আমার ২০২৩ সালের ইয়ার ইন রিভিউ। ২০২২ এর ইয়ার ইন রিভিউ এর ধারাবাহিকতায় এটাও লেখা। প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বছরের মাস হিসেবে এখানে এসেছে, গুরুত্ব অনুযায়ী না।
ইচ্ছা ছিল, প্রতি বছরের জানুয়ারীতেই নিজের ইয়ার ইন রিভিউ লিখে নিশনামায় পাবলিশ করা। ২০২২ এ দিলেও এই বছর নিজের আলসেমির কারণে দেওয়া হয় নাই। নিজের এই খারাপ অভ্যাসটা আমার বদলাতে হবে। আই হোপ, ২০২৫ এর জানুয়ারীতেই আমি ২০২৪ এর ইয়ার ইন রিভিউ লিখে ফেলতে পারব। প্রকাশও করতে পারব একই সময়ে!
যাই হোক, আস্তালাবিস্তা!