কেমন গেলো আমার ২০২২ সাল নিশনামা

নিশনামাঃ ফিরে দেখা ২০২২

চাকরিতে ঢুকার পর থেকে নিশনামা লেখা শুরু করার পর কখনো ভাবিনি এটা এখনো কন্টিনিউ করতে পারব। আমি আসলেই ভাগ্যবান যে লেখালেখিটা বাংলায় চালু রাখতে পেরেছি। গত কয়েকমাস ধরে নিশনামায় ফোকাস কমিয়ে ফেলেছিলাম, কারণ আমার জীবনে প্রায়োরিটি এখন অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। কি পরিবর্তন এটা নিয়ে লিখেছি, পড়বেন।

জানুয়ারিতে এই “ইয়ার ইন রিভিউ” লেখার পরিকল্পনা নিয়ে রাখলেও কাজের চাপে নিশনামায় লেখাই হচ্ছিলো না। এই কয়দিনে আস্তে আস্তে গুছিয়ে নিয়ে আবার পরিকল্পনা করছি এই বছর ভালোভাবে বাংলায় লেখালেখিতে ফিরে আসায়। নিজের কাজের প্রয়োজনে আমাকে নিয়মিতই ইংরেজিতে লিখতে হচ্ছে। তাই লেখালেখিটা অনেকটা মেন্টাল একটা চাপের মতো না হয়ে যায় আমি সেটাই চেষ্টা করি। চাই না, নিজেকে বেশি “বার্ন আউট” করে ফেলতে।

এখন বিরাট ভূমিকা না করে ২০২২ সালের রিভিউ শুরু করি তাহলে। আমি আমার জীবনে গত বছর ঘটে যাওয়া সুন্দর মূহুর্তগুলোকে নিচ থেকে উপরে গুরুত্বের উপর বিচার করে এখানে আমি তুলে ধরলাম।

০৫. নিশনামা ডট কম ২০২২ সাল

প্রথমেই আসি এই ওয়েবসাইট, নিশনামা ডট কম নিয়ে।

দেখেন এটা আমার গুরুত্বপূর্ণের লিস্টে পাঁচ নম্বরে! ২০২২ সালে নিশনামায় লেখালেখি আমি কোন প্রকার আশা ছাড়া করে গেছি। অর্থ্যাৎ, আমি খুব বেশি আশা করি নাই অনেক বেশি লোক এসে আমার লেখা পড়বে! ভেবেছিলাম বড়জোর আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টের মানুষ এসেই পড়বে শুধু।

কিন্তু তা না। গত ২০২২ সালে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিশনামা ব্লগে এসে আমার লেখা পড়েছে! শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বের প্রায় ৪৮টা দেশ থেকে ২২১টা শহরের মানুষ আমার লেখা পড়েছে! এটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে!

চিন্তা করেই তো আমার মনের ভেতর একটা অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! কোন রকম বাধা ছাড়াই আমি ইন্টারেন্টের মাধ্যমে এতসব লোকের কাছে পৌঁছাতে পারছি! এই অংশটাতে আমি বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং ডাটা তুলে ধরছি। যারা ডাটা দেখতে ভালোবাসেন তাদের অনেক ভালো লাগবে!

এটা হচ্ছে গুগল এনালাইটিক্সের হিসাবে ২০২২ সালে নিশনামা ডট কমের পাঠকঃ

নিশনামা ডট কম এনালাইটিক্স
2022 Analytics

এই স্ক্রিনশটটা দেখেন। এ হচ্ছে এভারেজের হিসাব। মাসে এভারেজ ২৫০+ পাঠক থাকতই ব্লগে।

নিশনামা ডট কম এনালাইটিক্স
Average Visits through 2022

যে দশটি শহর থেকে গত বছর নিশনামা বেশি পাঠক এসেছেঃ

নিশনামা ডট কম এনালাইটিক্স
Top 10 City

এই ১০টি দেশের বাংলাভাষীরা নিশনামা বেশি পড়েছেনঃ

নিশনামা ডট কম এনালাইটিক্স
Top 10 Country

নিশনামায় এসে পাঠকরা যে ১০টি লেখা বেশিবার পড়েছেনঃ

নিশনামা ডট কম এনালাইটিক্স
Top writings of 2022

এই লেখাগুলার লিংক এখানে দিয়ে দিলাম, না পড়ে থাকলে এখানে ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন-

  1. হাওয়া মুভি রিভিউ | যে মুভি দেখলাম – পর্ব ০১
  2. চরকি ওয়েব সিরিজ রিভিউঃ মরীচিকা | শিহাব শাহীন, আফরান নিশো, সিয়াম আহমেদ, মাহিয়া মাহি, জোভান
  3. নিশনামা হোমপেইজ – যেখানে বেশি ভিজিট এসেছে।
  4. আমার লাইব্রেরি | বইয়ের তালিকা (যদিও আপডেট না)
  5. প্রথম রক্তদানের অনুভূতি!
  6. আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স VS আর্টিস্ট, কেইসি নাইস্টাট, আমেরিকান ড্রিম ও তাদের বিলিয়নিয়ার | নিশনামা ডাইজেস্ট ৫৮

খুব বেশি ডাটা কপচাব না এখানে। তবে যারা ডাটা ভালোবাসে তাদের জন্য আমি নোশন পেইজে নিশনামা ডট কমের বাকি সব স্ট্যাটিস্টিক্স দিয়ে দিলাম। এই লিংকে ক্লিক করে আপনারা তা দেখতে পারবেন। আমি আসলে অভিভূত, কোন পাঠক ফোকাস না করেও এত পাঠক পাওয়ার জন্য!

০৪. ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের সফল বছর

অনেকেই হয়তো জানেন কিংবা জানেন না, আমি ডিজিটাল মার্কেটের হিসেবে সিলেটের একটি আইটি ফার্ম অথল্যাব এ ২০২১ সাল থেকে কর্মরত আছি। এখানে আমার দায়িত্ব ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট নামে একটা ওয়ার্ডপ্রেস প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং লিড হিসেবে সবরকম মার্কেটিং এর কাজ করা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ আরকি!

আমি খুবই ভাগ্যবান যে চাকরিতে ঢোকার কিছু মাসের মাঝেই এই প্রোডাক্টটার দায়িত্ব পাই। ওয়ার্ডপ্রেসে খুবই নিশ একটা মার্কেট প্রোডাক্ট ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট। তাই একটু হলেও চাপে ছিলাম এটাকে একটা সফল প্রডাক্ট হিসেবে দাঁড় করাতে। আমি ভাগ্যবান যে একটা অসাধারণ টিম আমি পেয়েছিলাম, যাদের সাথে কাজ করতে কখনো আমার হতাশা কাজ করে নাই। প্রতিটা সময় একটা এক্সাইটমেন্ট নিয়ে কাজ করতে পেরেছি আর করে যাচ্ছি।

অথল্যাব
AuthLab AGM 2021 (Jan 2022)

২০২২ সালটা শুরু হয়েছিলো অথল্যাবের ২০২১ এর এজিএম দিয়ে। শ্রীমঙ্গল চমৎকার রিসোর্টে চমৎকার ২টা দিন কাটিয়ে এসে আমি আর রাসেল ভাই (আমার টিমমেট) একদম মাথা বেঁধে কাজে লেগে গিয়েছিলাম। এরপর লাস্টের ৪-৫টা মাস আমরা দুজন নানা রকম আপস আর ডাউন দেখেছি। কখনো এমন দিনও গেছে যে মনে হয়েছে মাথার চুল ছিড়ি! হাহা! কিন্তু এরপরও আমরা আমাদের স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কাজ করে গেছি। হাল ছাড়ি নাই!

আর এক সময় সেটার ফল পেতে শুরু করি। থার্ড কোয়ার্টারে এসে মনে হয়েছিলো যে আমাদের সব কষ্ট সার্থক! ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট ৩৫ হাজার ডাউনলোড পেরিয়ে এই ক্যাটাগরিতে একটা শক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। বিশ্বের প্রায় চার হাজারের উপর বিজনেস এই প্রোডাক্ট ব্যবহার করে! এটার থেকে বড় প্রাপ্তি আর কি হতে পারে!

ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
Fluent Support Team

এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে আমাদের অসাধারণ কিছু টিম মেট – রাসেল ভাই, ডেভেলপার রাফি দ্যা জিনিয়াস, ডেভেলপার রাসেল ভাই, বিজিত ভাই, সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার কামরান ভাই, নাঈম ভাই, মাহফুজ ভাই, তানিয়া আপু, লাস্ট কোয়ার্টারে এসে সেই রকম এফোর্ট দেওয়া উত্তম ভাই। এনারা সবার কারণে ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট একটা সফল বছর পার করলো। (রাফি,কামরান ভাই আর তানিয়া আপুকে এজিএমে অনেক বেশি করেছি আমরা!)

ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
Fluent Support Team

বছর শেষের রিভিউ মিটিং থেকে যখন বের হয়ে আসছিলাম তখন মনে হয়েছিলো অনেক বড় কিছু অর্জন করে ফেলেছি! ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে ভালো কথা শুনতে কারা না ভালোবাসে! এই খুশির উপর “চেরি অন টপের” মত ছিলো ২০২২ সালের এজিএমে ফ্লুয়েন্ট সাপোর্টের “Best Marketing Team” of the year জেতাটা। ১ বছরের মাথায় একটা প্রোডাক্টের মার্কেটিং টিমের বেস্ট মার্কেটিং টিম এওয়ার্ড পাওয়া আসলেই অনেক বড় কিছু!

ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট
Receiving “Best Marketing Team” Award from our CEO Shahjahan Jewel

আমার মনে হয়েছিলো ২০২২ সালের সব কষ্ট সার্থক! আমি এটার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রাউড ফিল করি যে আমার টিমমেটরা এই সফলতার শতভাগ দাবীদার। রাসেল ভাই, উত্তম ভাই আমার পাশে না থাকলে যে কি হত! বিশেষ করে, রাসেল ভাই! এমন টিমমেট পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার!

অথল্যাব ফ্লুয়েন্ট সাপোর্ট (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
With Rasel Siddiqe Bhai

২০২২ সালে আমি আর রাসেল ভাই মেন্টাল বার্ন আউট হতে হতে প্রায় বেঁচেছি। এর ফলটাও আমরা বছর শেষে ভালোমতোই উপভোগ করতে পেরেছি। আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া। এখন তো শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা!

০৩. আলোকিত পাঠশালার আবার শুরু

অনেকেই হয়তো জানেন, কিংবা জানেন না – ২০১৫ সাল থেকে আমার কিছু বন্ধুরাসহ আমি একটা ফ্রি চ্যারিটি স্কুল চালিয়ে আসছি, নাম – “আলোকিত পাঠশালা“। এখানে গত ৬-৭ বছর ধরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা ফ্রি পড়াশোনা করে। অন্যের বাড়ির উঠোনে পাটি বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচে এই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিলো।

আলোকিত পাঠশালা (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
Alokito Pathshala

এরপর আস্তে আস্তে কলোনির তিন রুমে আমরা ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফোর পর্যন্ত আলোকিত পাঠশালাকে চালিয়ে নিয়ে এসেছিলাম! আমাদের পরিচিতদের কাছ থেকে পাওয়া ডোনেশন আর নিজেদের শ্রম ও সময় দিয়ে আমরা এই স্কুল চালিয়ে নিয়ে আসছিলাম।

আলোকিত পাঠশালা (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
Alokito Pathshala

কিন্তু এরপর এলো ২০২০ এ করোনার থাবা! যারা কারণে বাধ্য হয়ে ২০২০ মার্চ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই বছর আলোকিত পাঠশালা বন্ধ রাখতে হয়। করোনায় অনেক ছাত্রছাত্রী ঝরে পড়ে যায়, অনেকে জায়গা বদল করে আর অনেকের পরিবার শহর ছেড়ে আবার গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

২০২২ সালে তাই আমাদের একটা কঠিন কাজ ছিলো, আবার আলোকিত পাঠশালা আগের জায়গায় শুরু করা, আগের বা নতুন সুবিধাবঞ্চিত বাচ্চাদের স্কুলে আনা, নতুন ডোনার ও স্পন্সর খোঁজা। আলহামদুলিল্লাহ্‌, সকল বাঁধা পেরিয়ে আমরা ২০২২ সাল ২০টি বাচ্চা নিয়ে ক্লাস ওয়ান আর ক্লাস টুতে বছরটা শেষ করতে পেরেছি ।

আলোকিত পাঠশালা (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
Alokito Pathshala 2023

এখন আমরা ২০২৩ এর কার্যক্রমও শুরু করেছি, সপ্তাহের প্রায় ৬ দিন শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার দুজন শিক্ষিকা দুই ক্লাসে বাচ্চাদের ক্লাস নিচ্ছেন। আপনারা যারা ২০২৩ সালে স্পন্সর হয়ে কিংবা ডোনার হয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা! আপনারা আছেন বলেই আমরা এত বড় একটা স্বপ্ন দেখার সাহস পাই!

০২. আর্জেন্টিনার জয় আর মেসির হাতে বিশ্বকাপ!

দুই নাম্বারে এই পয়েন্ট দেখে অবাক হয়েছেন?

আরে ভাই, আপনি কি বুঝবেন এই আবেগ! যে ছোটবেলা থেকে বাপমার কাছে আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনার ঐশ্বরিক ফুটবল জাদুর কথা শুনে আমরা ৯০এর ছেলেপুলেরা বড় হয়েছি, যে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার খেলা দেখে, মেসির খেলা দেখে বড় হওয়া তাদের কাছে এই বিশ্বকাপ জেতার অনুভূতি কি সেটা আমার এইখানে লিখে বলার সাধ্য নাই।

মেসি ও আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়
Messi & World Cup – Better love story than twilight!

এতগুলো বছর পরে মেসির হাতে বিশ্বকাপ উঠেছে, এইটা বিশ্বাস করা আর আর্জেন্টিনার অসাধারণ খেলা দেখে নিজেকে ধরে রাখা খুব বেশি কঠিন ছিলো। সেমি-ফাইনাল আর ফাইনালের প্রতিটা মুহুর্ত একদম দম আটকে রাখার মতো ছিলো। মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখে আনন্দ অশ্রু বিসর্জন করেনি এমন আর্জেন্টিনা ফ্যান বোধ হয় নাই! আমি আর কোন ছার!

নিজেকে অনেক দিক দিয়ে ভাগ্যবান মনে হয়, ২০২২ সালটা আমার জন্য যেন ভালোলাগা ভালোবাসার দুয়ার খুলে দিয়েছিলো। এর পরের এক নম্বর পয়েন্টটা তার প্রমাণ!

০১. মেয়ের বাপ হওয়া!

এক নাম্বারে এটা থাকবে না তো কি থাকবে! সন্তান নিয়ে আমার আগ্রহ বিয়ের পর থেকেই ছিলো। আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রথম এই সুখবর আমার স্ত্রী আমাকে দেয় ২০২২ সালের মার্চে। এই অনুভূতি এক অন্যরকম অনুভূতি! আমাদের জীবনে আরেকটা প্রাণ আসছে। এই সুখের কোন কিনারা ছিল না!

এরপরের মাসগুলো অনেক বেশি ক্রুসিয়াল ছিলো! সারারাত আরাধনাকে (আমার স্ত্রী) খেয়াল রেখে আমার সকালে অফিস দৌড়াতে হত! যেহেতু একটা প্রোডাক্টের লিড,এই দায়িত্বও ফেলনা ছিলো না। এমন দিন গেছে, সারা রাত আরাধনা ব্যাথায় ঘুমাচ্ছে না, আমিও ঘুমাচ্ছি না। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ঘুমিয়ে সকালে উঠে তাকে খাইয়ে বা উঠিয়ে দিয়ে অফিস যাচ্ছি। সারাদিন সেখানে আবার অক্লান্ত পরিশ্রম। এইসময় আমার মনে হয়েছিলো আমি আমার লিমিটের শেষ সীমায় পৌঁছে আমার সর্বশক্তি দিয়ে সব প্রোডাক্টিভিটি ঢেলে দিয়ে আসছি।

রাতে বাসায় এসে মনে হত শরীর চলছে না। আমি ভাগ্যবান, আমার স্ত্রী এই অবস্থায়ও আমাকে মানসিক সাপোর্ট দিয়ে গেছে। যেখানে আমার তার মানসিক সাপোর্ট দিয়ে যাওয়ার কথা। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় মেয়েদের পরিবর্তন নিজের চোখে দেখে আর ওর ওই সময়টুকু অনুভব করে মাঝে মাঝে নিজেরই খুব খারাপ লাগত। আমি চাইলেও অনেক কিছু করতে পারছি না, শুধু পাশে বসে থকা ছাড়া। ওর রাতের ব্যাথার সময়টুকুতে নিজেকে এত অসহায় লাগত।

এই কয়েকটা মাস আমার কোম্পানি অথল্যাবের কথাও বলতে হয়, যে তারা আমাকে যে ফ্লেক্সিবিলিটি দিয়েছিলো তা হয়তো আমি অন্য কোথাও পেতাম না। তাই সবদিক ব্যাল্যান্স করতে পেরেছিলাম। আমার এই অস্থির সময়টুকুতে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য অথল্যাবের প্রতি আমি সারাজীবন নিজের বুকের কোনায় একটা জায়গা রাখব। এই ভালোবাসা শেষ হওয়ার নয়!

আমায়রাহ (Photo copyrighted) (do not use)Photo © Nishat Shahriyar
Meet Amayrah! (Photo © Nishat Shahriyar)

এই নয়টা মাসের সব কষ্ট নিমিষেই আমি ভুলে গিয়েছিলাম যখন আমি আমার মেয়ে “আমায়রাহ”কে কোলে নিয়েছিলাম। আমার আর আরাধনার কোল জুড়ে যেন আল্লাহ একটা রাজকুমারী পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাই তো তার নাম রেখেছি “আমায়রাহ”! যার অর্থই রাজকুমারী।

(Photo copyrighted) (do not use) Photo © Nishat Shahriyar
With Our Angel (Photo © Nishat Shahriyar)

বাচ্চা হওয়ার খবরের পর থেকেই আমার মনে সুপ্ত ইচ্ছা ছিল আল্লাহ যেন আমার ঘরে একটা কন্যা সন্তান পাঠান। এই কন্যা নিয়ে আমার পাগলামি অনেক আগ থেকেই ছিলো, আমার লেখায়ও এটা উঠে এসেছে। আমার বাবাও একটা মেয়ে চেয়েছিলেন কিন্তু আমরা দুইভাই হওয়ার পর উনার আর এই সৌভাগ্য হয় নি। আমার বাবার এই না পাওয়াটা আল্লাহ আমার মেয়েকে দিয়ে আমাদের মাঝে পাঠিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ্‌!

২০২২ সাল বলতে গেলে আমার জন্য এমনি সব সুখকর মুহুর্ত দিয়ে আল্লাহ কানায় কানায় ভরিয়ে দিয়েছেন যার জন্য আমি উনার দরবারে হাজার শোকরিয়া আদায় করি! দোয়া করি, ২০২৩ সাল এভাবেই আমাকে ভালোবাসা দিয়ে পরিপূর্ণ করে রাখুন!

যারা শেষ পর্যন্ত লেখাটা পড়েছেন তাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ। আমার মতো খুবই সাধারণ একজন মানুষের লেখা আপনার কষ্ট করে পড়েন, আমি এতেই খুশি! আর কি লাগে! দোয়া আর ভালোবাসা রইলো সবার প্রতি! আপনাদের জীবন আল্লাহ সুখে শান্তিতে কানায় কানায় পূর্ণ করে দিন, আমীন!

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.