|

মানুষ হয়ে জন্মানোটা আসলেই পাপ!

মানুষ হয়ে জন্মেছি।
আমি কি সুখী?

 

ইদানিংকালে এই প্রশ্নটা আমাকে ভাবায়। মাঝে মাঝে ভাবি এই নিয়ে। চারপাশের মানুষগুলোকে দেখি। নিজেকে দেখি। তখন মানুষ হয়ে জন্মানোয় নিজের উপর বিতৃষ্ণা আসে। হায় আমরা সেই মানুষ যার অন্যের নিন্দা করতে একটুকু আটকায় না। নিজের শত দোষ আমরা সযত্নে ঢেকে রাখি আর অন্যের ছোট্ট দোষগুলাকেও বড় করে প্রচার করতে দ্বিধা করি না।

আমরা সেই মানুষ যারা কিছু লোকের লাশের রাজনীতি দেখেও চুপ থাকি। তবুও যেখানে রক্ত টগবগিয়ে ফুটার কথা সেখানে আমরা নীরব থাকি। আমরা আমাদের চারপাশটাকে গ্রাহ্য না করে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি।


বড্ড আত্নকেন্দ্রিক আজ মানুষ! বড্ড আত্নকেন্দ্রিক। তাই আজ নিজেকে শুধাই, তুমি কি মানুষ? মানুষ হয়েছো না অমানুষ? আচ্ছা মানুষের সংজ্ঞাটা কি? অমানুষের সংজ্ঞাটাই বা কি? চারপাশের মানুষ গুলোর মাঝে আমি এই দুটোর সংজ্ঞা খুঁজি। কিন্তু যেটা খুঁজে পাই সেটা নিতান্তই কুটিলতা আর পরচর্চা।

আমি নিজে কি?
শুদ্ধ?
নাহ, আমি শুদ্ধ না। আমি একজন অভিনেতা।

যে নিপুনভাবে নিজের কুটিলতা আর অন্ধকার আড়ালে রাখতে পারে।
অন্যের সাথে আমার খুব বেশী পার্থক্য নেই। পার্থক্য শুধু এই জায়গায় যে আমি আমার অন্ধকারটাকে আবিষ্কার করতে পেরেছি। আমাই জানি আমার খারাপটাকে। আমি কতটুকু খারাপ। সত্যি বলতে কি, আমার এই অন্ধকার দিকটা নিজের কাছে পরিষ্কার হওয়ার পর আমার খারাপের প্রতি আমার ঘৃণা ভাবটা চলে গিয়েছে। সেখানে ভর করেছে উদাসীনতা। তীব্র উদাসীনতা। খারাপের প্রতি। এই উদাসীনতা আমার একটা নতুন উপলব্ধি বোধের জন্ম দিয়েছে।

আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি মানুষই মহাপুরুষ হওয়ার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। কিন্তু নিজ দোষে আমরা বিচ্যুত হই। মৃত্যুর সময় পৃথিবী থেকে বিদায় হই কাপুরুষ হয়ে। এর জন্য দায়ী কে? মা-বাবা? পরিবার? আত্নীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধব?? এই সমাজ??

হয়তো।
হয়তো মানুষের আত্নাটা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। আত্না যদি থেকেও থাকে হয় বাইরে খোল, ভেতরটা বড্ড ফাঁপা। আমি আমার নিজেকে দেখে কাঁদি। চারপাশের মানুষগুলোকে দেখে কাঁদি। হায় মানুষ! তুই এই পৃথিবীতে এসেছিলি মহাপুরুষ হয়ে, কিন্তু এই পৃথিবী ছাড়বি কাপুরুষ হয়ে।

অন্ধ যে, তার আলোর তৃষ্ণা থাকে। আর মানুষ সে তো আলোতে থেকেও অন্ধের মত আলোর জন্য তৃষনিত। অদৃশ্য অন্ধকারে নিমজ্জিত, হারিকেন জ্বালানো আলোরই নিশ্চয়তা নেই যেখানে! আজব খেল খোদা তোমার। সব কিছু দিয়ে দিয়েছো তবু রেখেছো কাঙ্গাল করে।

মানুষ খুব কি মানুষ হয়েছো?? অমানুষও হতে পারলা কই?? নাই! নাই কিছুই। মানুষ, রঙ্গিন চশমা পরেই তুষ্ট প্রানী। মেকি সুখের রাজ্যে পৃথিবী স্বর্গময়!! এটাই যথেষ্ট?? ক্লান্তি লাগে মাঝে মাঝে।

আমি মানুষ। তোমরা মানুষ। আমি অমানুষ। তোমরা অমানুষ। কি আর খারাপ ভাল এর পাঁচমিশালী। দুয়ে দুয়ে চার হয় যেমন।

মানুষ হয়ে জন্মানোটা আসলেই পাপ, কুকুরের জীবন হয়তো এর চেয়ে সুখকর! তারপরও আমরা মানুষ।

ওহে মানুষ,আবার তোরা মানুষ হ!

*** নিশনামা :১
(বেশ কিছুদিন আগের লেখা)

***মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন
প্রথম প্রকাশ – আমার সামহোয়্যার ইন ব্লগে …… 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.