|

‎প্রেমের অণু গল্প‬ – যে সোনায় কোন খাদ নেই

তার চোখের তারায় রাগ দেখি আমি।
টান মেরে তার বিছানায় বসাবার সময় হাত খামচি মেরে ধরে ছিল। লম্বা নখ গুলো হাতে বসে যাচ্ছিল।
‘আহ, লাগছে তো!’
‘লাগুক! আরো বেশী করে লাগুক!’বাঘিনীর চাপা ঘরঘর যেন শুনতে পাই।

তার সুন্দর খাড়া নাকটা লাল হয়ে গেছে। নিঃশ্বাসের সাথে ফুলছে। বসবার সময় ওড়নাটা বুক থেকে পড়ে গিয়েছিল। ফুলের ছাপ তোলা লাল রঙের একটা কামিজ পড়েছে সে আজ। ফর্সা দেহতে লাল পরীর মত লাগছিল।
ঝুকে থাকায় উর্বর বুক চোখ ঝলসে দিচ্ছে যেন। গলার সোনালী লকেটটা ঈর্ষা জাগিয়ে ফর্সা বুকের খাঁজে জায়গা নিয়েছে। 

 
ছ্যাত করে চোখে ধরল। চোখ সরিয়ে অস্ফুস্ট স্বরে বললাম, ‘ওড়নাটা ঠিক কর।’
‘কেনো? আমি এতই খারাপ? ভালো লাগে না বুঝি?’ তার কন্ঠে ক্রোধ টের পাই। অবাক হয়ে চোখ রাখি তার চোখে।
‘আমার তো অধিকার নেই!’ বলি আমি। বুক থেকে দলাপাকিয়ে অযাচিত অভিমান উঠে আসে কন্ঠে।
আমার কথায় যেন তার ভেতরে ক্রোধের বিস্ফোরণ ঘটে। আমাকে অবাক করে দিয়ে ঠাস করে গালে চড় বসায় সে। হতভম্ব আমি তাল সামলানোর সময় পাই না। এলোপাথাড়ি চড় থাপ্পড় পড়তে থাকে আমার উপর। বাধা দেওয়ারও কথা মনে থাকে না।
বাঘিনী তখন তার ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবার সুযোগ পেয়ে গেছে।
‘হ্যাবলা, বোকা, ছাগল, অধিকার নাই। অধিকার নাই তোমার না! কুত্তা, মরে যা তুই! আমাকে তো শেষ করে দিয়েছিস আর বলিস অধিকার নাই! মরে যা তুই!’ প্রচণ্ড রাগে চড় থাপ্পড় দিতে দিতে বলতে থাকে সে।

হঠাৎ করেই হাসতে থাকি আমি হো হো করে। হাসতে হাসতে হেঁচকি উঠে যায়। বাঘিনী প্রচণ্ড আক্রোশ নিয়ে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। প্রবল উত্তেজনায় তার ঠোঁট কাঁপছে, চোখ টলমল, এই বুঝি কেঁদে দিবে। মুখ লাল হয়ে আছে, নিঃশ্বাসে বুকের উঠানামা চোখে পড়ে।

তার হাত ধরি আমি। ছাড়িয়ে নেয় সে। লাল চুড়িগুলো রিনঝিন শব্দ তোলে। দুহাতে কাধ ধরে তাকে সোজা করি আমি। সাপের মত আবার ছোবল আনতে যায় সে।

আমি আর তাকে সে সুযোগ দেই না! কঠিন পাষান বুকের সাথে নরম বুকটা মিশে যায়। দুখানা তুলোর মত নরম, উত্তপ্ত ঠোঁটের দখল নেয় আমার ঠোঁট।
চারিদিকে নীরবতা নেমে আসে। সময় থমকে যায়। আঠালো ঠোঁটের স্বাদে হারিয়ে যায় দুটি অভিমানী বা রাগী সত্তা!

#‎প্রেমের_অণু_গল্প‬ – যে সোনায় কোন খাদ নেই
~নিশাত শাহরিয়ার / রাত ১১ টা। ১৫ ই জুন, ২০১৬

Similar Posts

এই লেখা পড়ে আপনার কেমন লেগেছে? কমেন্ট করুন ও আমাকে জানান! আসুন এই আলাপের মাধ্যমে একই ইন্টারেস্টে আমরা বন্ধু হই!

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.