|

ফিলিস্তিনিদের জন্য হ্যাশট্যাগ কতটা কার্যকরী?

 

ফিলিস্তিনিদের জন্য হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করা আর আল্লাহর কাছে দোয়া করা নিয়েও বরাবরের মতো আমরা বাঙালি পাছার মতো দুই ভাগ হয়ে গেছে। কি বিচিত্র এই জাতি আমরা।

ভাই এইসব পোস্ট বাদ দিয়ে আমাদের নিজে নিজের কাজ করা উচিত। যার প্রতিবাদ করার ইচ্ছা সে যেকোন উপায়ে প্রতিবাদ করবে। কেউ চাইলে পোস্ট দিয়ে, নামাজ পড়ে দোয়া করে এইটা আপনার ঠিক করে দেওয়ার কিছু নাই। যেকোনো প্রতিবাদকে নিরুৎসাহিত করার কিছু নাই। আর সোশাল মিডিয়ার দুনিয়ায় হ্যাশট্যাগ আর পোস্ট দেওয়ার অনেক ভূমিকা আছে।
 
আমি প্রতিবাদ করছি, আমরা সবাই মিলে প্রতিবাদ করছি, বাইরের শক্তিকে সেটা জানান দেওয়ার মাঝেও অনেক কিছু আছে। মুসলিম বিশ্বের জনতা নীরব না এইটা জানান দেওয়ার দরকার আছে। যারা পারছে তারা রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ করছে। টুইটার গিয়ে #FreePalestine #IStandWithPalestine হ্যাশট্যাগ গিয়ে দেখুন বুঝতে পারবেন এই প্রতিবাদ কত এফেক্টিভ। কারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে দেখতে পারবেন। খোদ আমেরিকায় মিছিল হচ্ছে। মানুষ টুইটার ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরই এক হইছে। সম্মলিত প্রতিবাদকে একজোট করার একটা প্রধান টুলস হচ্ছে বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়া। এরকম প্রতিবাদ কি রকম এফেক্টিভ আপনাদের নূন্যতম ধারণাও নাই। আপনারা আসলে বোকার স্বর্গে বাস করেন।
“এই সোশ্যাল মিডিয়ার একসেস যদি না থাকতো তাহলে আমরা ফিলিস্তিনের আপডেট প্রতি মিনিটে মিনিটে যে পাচ্ছি সেটাও মিডিয়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে যেত।”
 
 
আর যে হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রতিবাদ করছে সে আল্লাহর কাছে ফিলিস্তিনের জন্য দোয়া চাইছে কি না সেইটা আপনি কিভাবে জেনে গেলেন? দুইটাই তো করা আমাদের জন্য দায়িত্ব। শুধু মুসলমান হিসেবে না, একজন মানুষ হিসেবেও।
আমাদের এই সবকিছুতে পাছার মতো দুই ভাগ হয়ে যাওটা বন্ধ করা জরুরি।
 
আর আরো কিছু মূর্খ পয়দা হইছে, এরা শুরু করছে- আপনে রোজিনা ইস্যু সেই ইস্যু নিয়া লিখছেন তাইলে ফিলিস্তিনি নিয়া লিখলেন না কেন? এইটা নিয়ে লিখছেন এইটা নিয়ে লিখলেন না কেন? 
 
এইসব জোরজবরদস্তির প্রতিবাদ অন্যের কাছ থেকে আদায় করে কখনো কোন কিছু অর্জন করা যায় না। যার প্রতিবাদ করার সে করবে। সবাইই যে সব ইস্যুতে লোক দেখিয়ে প্রতিবাদ করবে এমন তো না। সব ইস্যুতেই প্রতিবাদ জরুরি। সব মানুষের সব ইস্যুতে এক সাথে কথা বলবে এটা আশা করাও বোকামি। এক টপিকের লেখায় কেন তাকে সবকিছু কাভার করতে হবে? এক ইস্যু নিয়ে লিখলে সে তার প্রতিবাদের অধিকার আপনি কেড়ে নিবেন এইটা আপনি কই থেকে পেলেন? আর সে ফিলিস্তিনের কষ্টে মর্মাহত কি না তা আপনি কিভাবে জেনে গেছেন? তাকে তো আপনার কাছে প্রমাণ দেওয়ার কিছু নাই। 
 
আপনি নিজের কাজ করেন। আপনি সঠিকভাবে নিজের কাজ করলে অন্যরা আপনাকে দেখে উৎসাহিত হবে৷ আপনি দোয়া করছেন সেটা ভালোভাবে করেন। যে হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে সে সেটা ভালোভাবে করুক। সে হয়ত মনে করছে দোয়ার পাশাপাশি তাকে মুখে,লিখে, বলে প্রতিবাদ করতে হবে। তাহলে সে অবশ্যই প্রতিবাদ করবে।
 
সাধ্যমতো অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রতিটি মানুষের ঈমানি দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে যেকোনো অন্যায়কারীকে দমনে সে যেন হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে, যদি তা করতে না পারে তবে সে যেন মুখ দিয়ে প্রতিহত করে। যদি সে মুখ দিয়েও না পারে তাহলে যেন অন্তর দিয়ে ঘৃণা পোষণ করে; আর এটাই দুর্বল ঈমানের পরিচয়।’ (বুখারি)
 
 

 

এই ছবিগুলা টুইটারের #GazaUnderAttack হ্যাশট্যাগ থেকে নেওয়া। কেউ একজন এইগুলা টুইটারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্ট করেছে বলেই তো আমি পেলাম। এখনকার মিডিয়া কি আমাকে আসল চিত্রটা দেখতে দিত? আমরা কি জানতে পারতাম কোথায় প্রতিবাদ হচ্ছে কি হচ্ছে না? এই সোশ্যাল মিডিয়ার জোরেই সারা বিশ্বের মানুষ আজ #FreePalestine ইস্যুতে এক হচ্ছে। ইসরাইলি সরকার লাখ লাখ ডলারের ক্যাম্পেইন ইন্টারনেটে করেও মানুষকে এখন নিজেদের দিকে প্রভাবিত করতে পারছে না। সবাইই ইসরাইলের ক্রাইমের ব্যাপারে আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন আর ফিলিস্তিনের প্রতি আগের থেকেও সমর্থন বাড়ছে। 
 
সমস্যা হলো আপনারা নিজেদের বাবলে বসে সবকিছু বিচার করেন, কিন্তু এখন যে দুনিয়া এক ক্লিকে দেখা যায় সেইটা মানতে চান না। এতে কিন্তু দুনিয়া আটকে রইছে না। আপনারাই পিছিয়ে পড়ছেন। নিজের দুনিয়া থেকে বের হয়ে আসল দুনিয়ায় আসেন। দ্বীন আর দুনিয়ার কাজে আসবে।
 
হোম পেইজে পাছা ভাগ হয়ে যাওয়া পোস্ট দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে লিখলাম। যদি কিছু পাবলিকের মাথায় ঢুকে তাইলে শুকরিয়া!


পড়ুন নিশাত শাহরিয়ারের অন্যান্য লেখাঃ

Similar Posts

এই লেখা পড়ে আপনার কেমন লেগেছে? কমেন্ট করুন ও আমাকে জানান! আসুন এই আলাপের মাধ্যমে একই ইন্টারেস্টে আমরা বন্ধু হই!

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.